বই পড়া নিয়ে মামার পরামর্শ


 

বিছানায় শুয়ে শুয়ে হাতে নিয়ে বই পড়তে থাকা এসএসসি পরীক্ষার্থী সোহানকে লক্ষ্য করে তার মামা জিজ্ঞেস করলেন,


সোহান,তুমি কী করছো?


বিছানা থেকে লাফ দিয়ে উঠে বই হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে সোহান বলল,মামা!আমি বই পড়ছিলাম।


অতঃপর ভাগনাকে পাশে বসিয়ে মামা জিজ্ঞেস করলেন,তুমি কী ধরণের বই পড়ছিলে,সোহান?


এই তো মামা,একজন বিখ্যাত রাজনীতিবিদের জীবনী বই পড়ছিলাম।


এই ধরণের বই কি তোমার সচরাচর পড়া হয়?


হ্যাঁ,মামা!এরকমই বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনী বই পড়া হয়।


এসব বিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনী পড়ার কি তোমার কোনো উদ্দেশ্য আছে? 


হ্যাঁ,আমার উদ্দেশ্য আছে।আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে, আমি তাদের কারো ভালো আর্দশ নিজের মধ্যে ধারণ করতে চাই।ফলে তাদের বই বেশি পড়া হয়।


এই পর্যন্ত কি তুমি কোনো উত্তম আদর্শধারী মানুষের সন্ধান পেয়েছো?


জ্বি না মামা,এখনো তো মন মতো কাউকে পাই নি।তবে খুঁজে চলছি।


আচ্ছা!উত্তম আদর্শ রয়েছে এমন কোনো মানুষের জীবনী বই পড়তে যদি তোমাকে বলা হয় তবে কি তুমি সেটা পড়বে?


একজন বই প্রেমিক হিসেবে আমি তো তা অবশ্যই পড়বো,মামা।তাছাড়া,এরকম জীবনীর খুুঁজেই তো এতোদিন আছি।


তার আগে আমাকে একটি কথা বলো,সোহান! মনে করো,তোমাকে পৃথিবীর বিখ্যাত কোনো এক ব্যক্তি এসে বললেন যে,আমি তোমাকে এমন একজন মানুষের কথা বলবো যার মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে তবে কি তুমি সেই মানুষের জীবনী পড়বে?


পড়বো মানে!অবশ্যই পড়বো।কারণ এতো বড়ো একজন সম্মানীত মানুষ যদি আমাকে সত্যিসত্যি ভালো কোনো আদর্শবান ব্যক্তির জীবনীর কথা বলেন তবে তাতে নিশ্চয়ই অনেক কল্যাণকর কিছু থাকবে।তখন আমি বরং বইটি পড়ার জন্য আরও বেশি মুখিয়ে থাকবো এবং অন্যদেরকেও পড়তে উৎসাহ দিয়ে যাবো।


বেশ তো!এখন যদি ওই বিখ্যাত ব্যক্তি না হয়ে বরং ওই বিখ্যাত ব্যক্তির সৃষ্টিকর্তা তথা তোমার- আমার সৃষ্টিকর্তা স্বয়ং মহান রাব্বুল আলামিন তোমাকে আমাকে কোনো মানুষের আর্দশের কথা বলেন,আদর্শ অনুসরণ করার কথা বলেন তবে কি আমাদের সেই মানুষটির জীবনী পড়া উচিত নয়?


কী বলেন মামা?


হ্যাঁ,তখন কি আমাদের মধ্যে ওই মহান ব্যক্তির জীবনী পড়ার জন্য আরও বেশি তাড়না কাজ করার কথা নয়?ওই বিখ্যাত ব্যক্তির বলা কথার মধ্যে যদি তুমি কল্যাণকর কিছু আশা করতে পারো তবে যেখানে স্বয়ং আল্লাহ তা'য়ালা বলছেন সেখানে কি অধিকতর কল্যাণকর না হওয়ার কোনো কারণ থাকতে পারে?


এছাড়া,দুনিয়ার সামান্য একজন বিখ্যাত ব্যক্তির কথা যদি তোমার কাছে দামি মনে হয়,তাৎপর্যপূর্ণ মনে হয় তবে যখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা নিজে বলেছেন তখন কি বিষয়টি আমাদের নিকট আরো দামি হওয়ার কথা নয়? আরো তাৎপর্যপূর্ণ হওয়ার কথা নয়?


তা তো অবশ্যই,মামা।স্বয়ং আল্লাহ বলবেন আর আমরা পড়বো না তা তো কোনোভাবেই হতে পারে না।কিন্তু আল্লাহ কি এ ব্যাপারে আমাদেরকে কিছু বলেছেন নাকি,মামা? 


হ্যাঁ,নিশ্চয়ই।আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা বলেছেন, তোমাদের জন্য অবশ্যই আল্লাহর রাসূলের (জীবনের) মাঝে অনুকরণযোগ্য উত্তম আদর্শ রয়েছে,আদর্শ রয়েছে এমন প্রতিটি ব্যক্তির জন্য,যে আল্লাহ তা'য়ালার সাক্ষাৎ পেতে আগ্রহী এবং পরকালের মুক্তির আশা করে,(সর্বোপরি) যে বেশি পরিমাণে আল্লাহ তা'য়ালাকে স্মরণ করে। [১]


এছাড়া,মহান আল্লাহ তা'য়ালা নিজে রাসূল (সাঃ) এর চরিত্রের ব্যাপারে সাক্ষী দিয়ে বলেছেন,তুমি অবশ্যই মহান চরিত্রের ওপর (প্রতিষ্ঠিত) রয়েছো। [২]


সোহান,এবার তুমিই বলো,এরপরও কি আমরা এমন মহান চরিত্রের অধিকারী রাসূল (সাঃ) এর জীবনী পড়া থেকে নিজেদেরকে গুটিয়ে রাখবো?এরপরও কি আমরা নিজেদের মধ্যে রাসূল (সাঃ) এর চরিত্র ধারণ করার চেষ্টা করবো না?


আসলে মামা,স্বয়ং আল্লাহ তা'য়ালা রাসূল (সাঃ) এর আদর্শের ব্যাপারে এভাবে বলেছেন-তার কিছুই আমি আগে জানতাম না।


আল্লাহর কোরআন না পড়লে জানবে কী করে? আগে তো পবিত্র কোরআন পড়তে হবে।তাই না? কোরআনের মাধ্যমেই তো তুমি এমন বার্তা পাবে।


সোহান,তুমি কি ওই আয়াতের শেষাংশে একটি বিষয় খেয়াল করে দেখেছো যেখানে আল্লাহ তা'য়ালা বলেছেন,রাসূল (সাঃ) এর জীবনের মধ্যে তিন ধরণের মানুষের জন্য আদর্শ রয়েছে।প্রথমত, যারা আল্লাহর সাক্ষাৎ কামনা করে।দ্বিতীয়ত,যারা পরকালে মুক্তি পেতে চায় এবং তৃতীয়ত যারা আল্লাহকে বেশি করে স্মরণ করে।এখন আমরা কি আল্লাহর সাক্ষাৎ এবং পরকালের মুক্তি কামনা করি না?


নিঃসন্দেহে আমরা আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করতে চাই এবং পরকালেও মুক্তি পেতে চাই।


তাহলে কি আমাদের রাসূল (সাঃ) এর জীবনী তথা সীরাহ নিয়ে বেশি বেশি পড়াশোনা করা উচিত নয়?আর পৃথিবীর একজন বিখ্যাত মানুষের কথায় যদি আমাদের মধ্যে কারো জীবনী পড়ার আগ্রহ সৃষ্টি হতে পারে তবে স্বয়ং আল্লাহর কথায় আমাদের মধ্যে কি রাসূল (সাঃ) এর জীবনী পড়ার আরো বেশি আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ার কথা নয়?


নিশ্চয়ই,এটা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না, মামা।


--দেখো,সোহান!আমরা যদি রাসূল (সঃ) এর জীবনী পড়ি তবে আমরা উত্তম আদর্শ খুঁজে পাবোই।এতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। কেননা আল্লাহ তা'য়ালা নিজেই রাসূল (সাঃ) এর উত্তম আদর্শের কথা বলেছেন,উত্তম চরিত্রের কথা বলেছেন।


ফলে আমরা রাসূল (সাঃ) এর সীরাহ নিয়ে পড়াশোনা করলে প্রকৃত আদর্শ সম্পর্কে জানতে পারবো, নিজেরাও সেই আদর্শ ধারণ করতে পারবো,সর্বোপরি নিজেরা উত্তম চরিত্রবান হতে পারবো।ইন শা আল্লাহ!আর তুমি যতোই বিখ্যাত অমুক তমুকের বই পড়ে উত্তম আদর্শ তালাশ করো না কেনো একটা কথা জেনে রেখো যে, রাসূল (সাঃ) এর মতো এমন উত্তম আদর্শের মানুষ পৃথিবীতে আর দ্বিতীয় কাউকে খুঁজে পাবে না।


এখন আমরা মুসলিম হয়েও যদি রাসূল (সাঃ) এর জীবনী না পড়ে,রাসূল (সাঃ) এর উত্তম আদর্শ অনুসরণ না করে অন্যের জীবনী পড়ে অন্যের মধ্যে উত্তম আদর্শ খুঁজতে যাই তবে সেটা ভারী অন্যায় হবে।কেননা উম্মত হিসেবে রাসূল (সাঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা আমাদের দায়িত্ব বটে।উম্মত হয়ে রাসূল (সাঃ) এর আদর্শ অনুসরণ না করে অন্যের আদর্শ অনুসরণ করা রাসূল (সাঃ) কে অপমান করার নামান্তর।নাউজুবিল্লাহ!ফলে অন্যের জীবনী পড়ার আগে রাসূল (সাঃ) এর জীবনী পড়ার বিষয়টি আমাদের নিকট বেশি দাবি রাখে।


এছাড়া,আমাদেরকে ভুলে গেলে চলবে না,কিয়ামতের দিন কোনো পীর-বুযুর্গ কিংবা রাজনৈতিক কোনো নেতা-নেত্রী নয় বরং রাসূল (সাঃ)-ই আমাদের জন্য আল্লাহর নিকট সুপারিশ করবেন।এখন যিনি আমাদের কঠিন সময়ে আমাদের জন্য সুপারিশ করবেন সেই উনার জীবন সম্পর্কেই যদি না জানলাম,উনার আদর্শই যদি নিজের মধ্যে ধারণ করার চেষ্টা না করলাম তবে আমরা উনার কেমন উম্মত হলাম?একবারও কি ভেবে দেখা হচ্ছে,কীভাবে উনার জীবনী আমাদের নিকট উপেক্ষিত থেকে যায়?


একটা কথা মনে রাখবে,আমি রাসূল (সাঃ) কে ভালোবাসি বললেই রাসূল (সাঃ) এর প্রতি আমার ভালোবাসা দেখানো হয়ে যায় না।মূলত,রাসূল (সাঃ) এর আদর্শে আদর্শিত হওয়াতেই প্রকৃত ভালোবাসা নিহিত।যখন আমি আমার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রাসূল (সাঃ) এর সুন্নতকে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করবো, রাসূল (সাঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করে নিজেকে একজন আদর্শবান ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তোলার ব্যাপারে তৎপর থাকবো ঠিক তখনই বুঝতে পারবো আমি আস্তে আস্তে রাসূল (সাঃ) কে ভালোবাসতে পারছি।অন্যথায়,কেবল মুখেই ভালোবাসা থেকে যাবে।আর এমন ভালোবাসার কোনোই মূল্য নেই যদি না সেই ভালোবাসা কাজেকর্মে ধারণ করা হয়।


মামা,আপনার কথাগুলো মন ছুঁয়ে গেলো। আপনি একদম সত্যি কথাই বলেছেন।আপনার কথাগুলোর গভীরতা অনেক।এসব কথা আমার আগে শুনলে আরোও ভালো হতো।তাহলে মামা, রাসূল (সাঃ) জীবনী তথা কোন সীরাহ বই দিয়ে সর্বপ্রথম পড়া শুরু করলে ভালো হবে?


আমি তোমাকে সীরাহ পাঠের আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ার জন্য কয়েকটি বইয়ের কথা বলবো।সীরাহ পাঠের জন্য অনেকগুলো ভালো বই রয়েছে। তন্মধ্যে একটি হচ্ছে সীরাত বিশ্বকোষ (দশ খন্ড),আর-রাখিকুল মাখতুম ইত্যাদি বই রয়েছে। তবে এগুলো বিগিনারদের জন্য উত্তম নয়। বিগিনাররা এগুলো হঠাৎ করে পড়া শুরু করলে হয়তো সীরাহ পড়ার আগ্রহই হারিয়ে ফেলতে পারে।বিগিনার হিসেবে যে কয়েকটি বই পড়তে পারো তা হলো,তোমাকে ভালোবাসি হে নবী (গুরুদত্ত সিংহ), মহানবী(মাজিদা রিফা),সীরাহ (রেইনড্রপস)।বিগিনারদের সীরাহ পাঠের জন্য এগুলো একেকটি মাস্টারপিস।


ধন্যবাদ,মামা।আমি শীঘ্রই এগুলো পড়ে নিবো। ইন শা আল্লাহ!


মা শা আল্লাহ!শুনে খুব খুশি হলাম।আচ্ছা সোহান, এবার তোমাকে আরেকটি বিষয় বলি।আর তা হচ্ছে, তোমাকে যদি এখন বিখ্যাত কোনো লেখকের বই পড়ার সাজেস্ট করা হয় তবে তুমি তা নিশ্চয়ই পড়বে।তাই তো?


জ্বি মামা,অবশ্যই।তখন তো আমার মধ্যে সেই বই পড়ার জন্য এক ধরণের এক্সাইটমেন্ট কাজ করবে।তাড়াতাড়ি কীভাবে সেই বই সংগ্রহ করা যায় সেটা নিয়ে মনের মধ্যে খুব তাড়না থাকবে।


কিন্তু কেনো পড়বে?কেনো এতো এক্সাইটেড হবে?


প্রথমত,একজন বিখ্যাত লেখক তার গ্রন্থে কী লিখেছেন না লিখেছেন তা জানার জন্য মনের মধ্যে অন্য রকমের এক আগ্রহ কাজ করে। দ্বিতীয়ত,সাহিত্য মানও অনেক উঁচু পর্যায়ের থাকে।ফলে তাদের বই পড়ার মজাই আলাদা।তাছাড়া,বিখ্যাত লেখকের উক্তিগুলোই তো বিখ্যাত থাকে।তাদের কথাগুলো থেকে জীবনের অনেক দিকনির্দেশনা পাওয়া যায় যেগুলো জীবন চলার পথে অনেক কাজে দিবে।


এখন সেই বিখ্যাত লেখকের ভূমিকায় যদি স্বয়ং আল্লাহ তা'য়ালা নিজেই হোন তবে আল্লাহ তা'য়ালার গ্রন্থ কি তোমার সবার আগে পড়া উচিত নয়?


কী বলেন,মামা?সেটা তো আরো বেশি এক্সাইটমেন্ট নিয়ে পড়া উচিত।


দুনিয়ার সামান্য একজন বিখ্যাত লেখক তার গ্রন্থে কী লিখেছেন সেটা পড়ার জন্য যদি আমরা হুমড়ি খেয়ে পড়তে পারি,সেটা পড়ার জন্য যদি আমাদের মধ্যে ব্যকুলতা কিংবা উত্তেজনা কাজ করতে পারে তবে আসমান-যমীনের মালিক মহান রাব্বুল আলামিন উনার পবিত্র গ্রন্থে কী বলেছেন তা জানার জন্য কি আমাদের আরোও বেশি হুমড়ি খেয়ে পড়া উচিত নয়?আমাদের মনে কি এমন আগ্রহ থাকা উচিত নয় যে, দেখি তো! আসমান যমীনের মালিক তথা আমার নিজের মালিক উনার গ্রন্থে কী বলেছেন?কী,তখন কি আমাদের মধ্যে আরো বেশি উত্তেজনা কাজ করা উচিত নয়?


এছাড়া,দুনিয়ার একজন বিখ্যাত লেখক তার গ্রন্থে কী লিখেছেন সেটা জানার জন্য যদি আমাদের আগ্রহের শেষ না থাকে তবে স্বয়ং মহান রাব্বুল আলামিন উনার গ্রন্থে কী বলেছেন তা জানার জন্য কি আমাদের আরো বেশি আগ্রহ থাকার কথা নয়?


অপরদিকে,পবিত্র কোরআনের চেয়ে সবচাইতে উঁচু মানের সাহিত্য আর কী হতে পারে?বলা চলে, প্রতিটি আয়াতই তো ছন্দময়।কতো চমৎকার সুর!কতো চমৎকার বাণী!সুবহান'আল্লাহ!এতোটা চমৎকার ছন্দময় গ্রন্থ তুমি আর কোথায় পাবে?যতো পড়বে ততোই তো পড়তে মন চাইবে,যতো শুনবে ততোই তো শুনতে মন চাইবে।এমনই এক অভূতপূর্ব এবং রহস্যময় গ্রন্থ।এই গ্রন্থ তেলাওয়াত করলে কিংবা শুনলে মনটা শীতল হয়ে যায়, হৃদয়ের গহীনে যেনো শীতল বাতাস বয়ে যায়। সুবহান'আল্লাহ! 


মামা,আপনার করে যাওয়া প্রতিটি প্রশ্নই ছিল অন্তর্দৃষ্টসম্পন্ন।প্রতিটি প্রশ্নেই চিন্তার খোরাক রয়েছে।


শোনো সোহান,তুমি যখন অর্থসহ কোরআন তেলাওয়াত করবে তখন তোমার মধ্যে অন্যরকম এক অনুভূতি কাজ করবে।তাতে ঈমান আরো বৃদ্ধি পাবে।আর আমল করতেও আরো স্বাদ পাবে।এছাড়া,তুমি যদি তোমার রবকে অনুধাবন করতে চাও তবে তুমি কোরআনের বাণীগুলো শক্ত করে আঁকড়ে ধরো, কোরআনের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলো।তোমার বন্ধুুকে যেমন ঘনিষ্ঠ বন্ধুতে পরিণত করতে পারলে সে তোমার বিপদের সময় তোমাকে ছেড়ে চলে যাবে না ঠিক তেমনি কোরআনকে তোমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুতে পরিণত করতে পারলে এই কোরআনও তোমার বিপদে তোমাকে ছেড়ে চলে যাবে না।


মামা,এখন থেকে আমি অর্থসহ পবিত্র কোরআন পাঠ করবো।সত্যিই তো,আল্লাহ কী বলেছেন সেটা জানার জন্য আমাদের মধ্যে আরো বেশি আগ্রহ থাকা উচিত।অন্যথায়,মৃত্যুর পর না জানি আমাদেরকে কতো আপসোস করতে হবে।


হ্যাঁ,তাই করো।তার চেয়ে বড়ো হতভাগা আর কে হতে পারে যে তার জীবনে অনেক বিখ্যাত লেখকের গ্রন্থ পড়লো এবং অনেক কিছুই জানলো অথচ একজন মুসলিম হয়েও তার সৃষ্টিকর্তা উনার গ্রন্থে কী বলেছেন সেটা পড়লোও না এবং জানলোও না?


সুতরাং নিজেকে যদি তুমি এমন হতভাগাদের দলে দেখতে না চাও,আপসোসকারীদের সঙ্গী হতে না চাও তবে আর দেরি করো না।অচিরেই আল্লাহর গ্রন্থ তথা পবিত্র কোরআন পাঠ করা শুরু করে দাও এবং প্রতিটি কথা বোঝার চেষ্টা করো,হৃদয় দিয়ে অর্থ অনুধাবন করার চেষ্টা করো।আর তাতেই জীবনের প্রকৃত দিকনির্দেশনা পেয়ে যাবে।এভাবেই একসময় পৌঁছে যাবে সফলতার চূড়ান্ত পর্যায়ে।ইন শা আল্লাহ! 


মামা,আমাকে মূল্যবান কথাগুলো বলার জন্য আপনাকে আবারও অনেক ধন্যবাদ।আসলে আপনি যেভাবে বলেছেন সেভাবে কখনো চিন্তা করা হয়নি কিংবা কেউ এভাবে বলেও নি বিধায় এতো এতো লেখকের গ্রন্থ পড়েও নিজের সৃষ্টিকর্তার গ্রন্থ অর্থসহ বুঝে পড়া উচিত-সেই উপলব্ধিটুকুই আমার হয়নি।আর তাই কখনো গুরুত্ব দিয়েও পড়া হয়নি।আল্লাহ কী বলেছেন তা-ও জানা হয়নি।এটা আমার জন্য অনেক বড়ো এক দুর্ভাগ্যের বিষয় বটে।


যাইহোক,তুমি এখন বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেছো তাতেই ভালো।আলহামদুলিল্লাহ!তুমি এখন থেকে বেশি বেশি করে কোরআনের পিছনে সময় দাও, কোরআনকে নিজের সঙ্গী বানিয়ে নাও।একইসাথে, অন্যদেরকেও কোরআন পড়ার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করে যাও।তোমার সুসময়ে যদি তুমি কোরআনকে সঙ্গী করে রাখতে পারো তবে তোমার জীবনের কঠিন সময়ে তথা কবরের জগতে এবং পরকালের জগতে কোরআনও তোমার সঙ্গী হয়ে থাকবে।ইন শা আল্লাহ! 


জ্বি মামা,আপনি খুব সুন্দর বলেছেন।আমি এখন থেকে কোরআনকে নিজের সঙ্গী বানানোর চেষ্টা চালিয়ে যাবো।ইন শা আল্লাহ!আমার জন্য আপনি দোয়া করবেন,মামা।

 

নিশ্চয়ই।


রেফারেন্স:


[১] সূরা আল আহযাব,আয়াত নং :২১

[২] সূরা আল ক্বালাম,আয়াত নং : ০৪

Post a Comment

Previous Post Next Post